সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
র্যাব-১১ অভিযান চালিয়ে নরসিংদীর সদর হতে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে । গত ২১ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে সদর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মোঃ অভিত মিয়া (২৮), মোঃ পাপ্পু মিয়া (২৮), মারিয়া আক্তার মন্টি (২৩) এবং মোঃ বাদল মিয়া (৫৮)। আসামীরা সবাই নরসিংদী জেলার সদর থানার স্থায়ী বাসিন্দা।
গ্রেফতারের বিষয়টি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন র্যাব -১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি মোঃ রাসেল (২৮) নামক এক ব্যক্তি র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ বরাবর একটি অভিযোগ করেন । এরপর র্যাব অভিযান চালায়। আটক আসামীরা গত ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে নরসিংদী আদালতের সামনে থেকে একটি মাইক্রোবাসযোগে ছদ্মবেশে ডিবি’র পরিচয় দিয়ে রাসেলকে অপহরণের উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে চেতনা নাশক ঔষধ প্রয়োগ করতঃ অবচেতন করে তাদের ভাড়া করা একটি ফ্লাট বাসায় নিয়ে যায়। অতঃপর উক্ত বাসায় একটি গোপন কক্ষের ভিতর হাত-পা ও চোখ বেঁধে রাসেলকে মারধর করাসহ বিভিন্ন শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে এবং সেই নির্যাতনের ভিডিও তারা মোবাইলে ধারণ করে মুক্তিপণের ১০ লক্ষ টাকার জন্য রাসেলের পরিবারের কাছে পাঠায় এবং এই বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য রাসেলের পরিবারকে রাসেল হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা ভিকটিম রাসেল এর যৌনাঙ্গ সিগারেট জ্বালানোর লাইটারের সাহায্যে পুড়িয়ে দেয়। রাসেলের পরিবার কোনো উপায় না পেয়ে রাসেল জীবন বাঁচাতে ঐদিন রাতে বিকাশের মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকা তাদের কাছে পাঠায় এবং বাকী টাকা নগদে পরিশোধ করবে বলে জানায়। পরদিন ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখ রাতে অবশিষ্ট টাকা নেয়ার জন্য রাসেলকে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসযোগে নরসিংদীর শাপলা চত্তরে আসার পর রাসেল প্রস্রাব করা জন্য মাইক্রোবাস থেকে নামে এবং একটি পিকআপ ভ্যান সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় তৎক্ষণাৎ রাসেল ডাকাত, ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করে। তার চিৎকারে লোকজন আসতে থাকলে অপহরণকারীরা তাকে রেখেই দ্রুত পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাসেল তার পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিৎসার নেয়ার পর মোটামুটি সুস্থ্য হয়ে র্যাব-১১ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করে।
র্যাব আরো জানান, গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিম মোঃ রাসেল (২৮)কে অপহরণের বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদানসহ অন্যান্য আরও অপরাধের লোমহর্ষক বর্ননা দিয়েছেন। গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা অপহরণের উদ্দেশ্যে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশে মাইক্রোবাস যোগে ঘুরে বেড়ায়। সুযোগ বুঝে বিভিন্ন এলাকার বিত্তশালী লোকদের অপহরণ করে চেতনা নাশক ঔষধ প্রয়োগ করত অবচেতন করে গোপন স্থানে নিয়ে জিম্মি করে বিভিন্ন শারিরিক নির্যাতন করাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ নিয়ে থাকে।গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে নরসিংদী জেলার সদর থানায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।